চলুন শুরু করি মধু সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।
প্রকৃতি থেকে পাওয়া সেরা উপাদান হলো মধু।
মধুতে খাদ্যের ৫টি উপাদান যেমন শর্করা, প্রটিন, ভিটামিন, খনিজ ও স্নেহ পদার্থ বিন্যাস্ত আছে। মধু উচ্চতর ঔষুধিগুন সম্পন্ন ভেষজ ঘন তরল পদার্থ। মধুর বিশেষ আর একটা গুণ হলো এটা কখনো নষ্ট হয় না।
মধুর ব্যাবহার :
আমরা প্রতিনিয়ত মধু ভিন্ন ভিন্ন কাজে ব্যাবহার করে থাকি। কেউ জেনে ব্যাবহার করি আবার কেউ না জেনে ব্যাবহার করে থাকি।
মধুকে শক্তি ও তাপের উৎস হিসাবে ব্যবহার:
মধুকে প্রাকৃতিক এনার্জি বুস্টার বলা হয়।পরিশ্রম (কাজ) করলে আমাদের শক্তি ক্ষয় হয় এবং দুর্বলতা অনুভব করি। মধু খেলে সাথে সাথে শক্তি বাড়ে দুর্বলতা দূর হয়। কনকনে শীতেরকালে মধু তাপ উৎপন্ন করে শরীরকে গরম রাখে। তিন টেবিল চামচ মধু ২০০গ্রাম ফুটানো পানির সঙ্গে খেলে শরীর চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
রোগ নিরাময় ও ঔষধ হিসাবে মধুর বিস্তারিত ব্যবহার :
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান মধুকে উচ্চতর ঔষুধিগুন সম্পন্ন ভেষজ পদার্থ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। মধুতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান, যেটা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সর্বাধিক বৃদ্ধি করে।
যৌনতা বৃদ্ধিতে ঔষুধ হিসাবে মধুর ব্যাবহার:
মধু যৌনতা বৃদ্ধিতে সহয়তা করে। মধু, খেজুর, বাদাম ও কালোজিরা সঠিক নিয়মে মেনে নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার যৌন মিলনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ঔষুধ হিসাবে মধুর ব্যাবহার:
চোখের যত্ন সম্পর্কে অসচেতন।শুধু মাত্র অবহেলায় অল্প বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যায়।
খাটি মধু ও লাল গাজরের রস তৈরি করে মিশিয়ে খেলে দৃষ্টিশক্তি পূর্বের আবস্থা ফিরে পায় ও দৃষ্টিশক্তি বাড়ে।
রুপচর্চা ও প্রশাধনী হিসাবে মধুর ব্যবহার:
আমরা প্রত্যকে ত্বকের যত্ন ও চুলের যত্ন নিতে মধু ব্যবহার করতে পারি।নিয়মিত মধু ব্যাবহারে মুখের ত্বকের লাবণ্যতা ও মসৃণতা বৃদ্ধির করে। মধু ও আমলকীর রস চুল ঝরে পড়া রোধ করে।
ওজন কমাতে মধুর ব্যবহার:
খাঁটি মধুতে চর্বি জাতীয় কোন পদার্থ নেই ।খাটি মধু পেট ও পাকস্থলী পরিষ্কার করে, চর্বি কাটায় ফলে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস এরঔষুধ হিসাবে মধুর ব্যাবহার:
মধু মিষ্টি হলেও ডায়াবেটিস রুগী মধু খেতে পারে। মধু নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
কাশীর ঔষুধ হিসাবে মধুর ব্যাবহার:
খুসখুসে কাশী, দীর্ঘদিনের কাশী বাসকের পাতার রস ও মধুর মিশ্রন নিয়মিত সকাল সন্ধ্যা খেলে কশী থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
হজমী ঔষুধ হিসাবে মধুর ব্যাবহার:
মধু তরল পদার্থ। সাদ এবং গন্ধ প্রাকৃতিকভাবেই দুটি মিষ্টি। তাই মধু সহজে সকল খাদ্য হজমে সহায়তা করে থাকে।
গলার স্বর বৃদ্ধিতে ঔষুধ হিসাবে মধুর ব্যাবহার:
যে কোন কারণ বসত গলার স্বরের পরিবর্তন হতে পারে। প্রতিনিয়ত গরম পানি ও মধু খেলে কন্ঠ স্বর সুন্দর হয় ও মধুর হয়।
হার্টের ঔষুধ হিসাবে মধুর ব্যাবহার:
১ চামচ মৌরির গুঁড়োর সঙ্গে ৩ টেবিল চামচ মধুর মিশ্রণ হার্টেররোগের সেরা ঔষধ হিসেবে কাজ করে। হার্টের কোষের এক্টিভিটি বৃদ্ধি করে।
সাদ ও রুচি বৃদ্ধির জন্য ব্যাবহার:
আমরা বিভিন্ন খাবার তৈরি করি। সেগুলোর সাদ বৃদ্ধির জন্য মধু ব্যাবহার করতে পারি। মধু খেলে মুখের রুচি বৃদ্ধি পায়। খাবার হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
সর্বপরি হাজার হাজার রোগের প্রতিশেধক হল মধু।আমাদের উচিৎ মধু নিয়মিত পান করা বা খাওয়া। তবে ওষুধের মত নিয়ম মেনে মধু খাওয়া।
নিচে পোষ্টটি থেকে মধু খাওয়ারর সঠিক নিয়ম ও খাঁটি মধু চিনার উপায় দেখে নিন
তারুণ্য ভাব ধরে রাখতে ঔষুধ হিসাবে মধুর:
ব্যাবহারতারুণ্য ভাব ধরে রাখতে মধু অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে । মধুতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান, যা ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করে ত্বকের চামড়া ভাঁজ পড়া ও চোপসে যাওয়া রোধ করে থাকে। মধু কোষ, শিরা, জালিকা সাথে মিসে শরীরের সামগ্রিক শক্তি ও তারুণ্য বৃদ্ধি করে।
হাড় ও দাঁত গঠনে ঔষুধ হিসাবে মধুর ব্যাবহার:
মধুর থাকে অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ক্যালসিয়াম। সাভাবিক ভাবেই ক্যালসিয়াম দাঁতের পাথরি, হাড় ও চুলের গোড়া মজবুত শক্তিশালি করে, এছাড়াও নখগুলোর ঔজ্জ্বল্যতা বৃদ্ধি করে, হাড়ের ভঙ্গুরতা রোধ করে থাকে।
আমাশয়, রক্তশূন্যতা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঔষুধ হিসাবে মধুর ব্যাবহার:
মধুতে রয়েছে সকল প্রকার ভিটামিন। ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স আমাদের রক্তশূন্যতা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহয়তা করে।দীর্ঘ সময়ের থাকা আমাশয় ইত্যাদি নানাবিধ জটিল রোগের উপসম দেয়।
হাঁপানি রোধের ঔষুধ হিসাবে মধুর ব্যাবহার:
১গ্রাম গোলমরিচ গুঁড়ো করে তার সঙ্গে ১গ্রাম মধু এবং সামান্য আদা মেশান। মিশ্রণটি ওষুধের মত নিয়ম করে সকালে, দুপুরে, রাতে তিনবার খান। ৯০% হাঁপানি রোগের কার্যকারী ঔষধ হিসেবে কাজ করবে।
রক্ত উৎপাদনে ও রক্ত পরিষ্কারক :
মধুতে থাকে আয়রন যা রক্ত উৎপাদন করতে সাহায্য করে। ১ গ্লাস হাল্কা পানির সঙ্গে ৩ চামচ মধু ও একটু লেবুর রস মেশান। মিশ্রনটি নিয়মিত পান করলে রক্ত পরিষ্কার করে থাকে এমনকি রক্তনালিগুলোও পরিষ্কার করে।
পাকস্থলীর ঔষুধ হিসাবে মধুর ব্যাবহার:
মধু পাকস্থলীর কাজের এক্টিভিটি বৃদ্ধি করে ও সকল প্রকার খাদ্যের হজমের গোলমাল দূর করে। মধু নিয়মিত ব্যবহারে হাইড্রোক্রলিক অ্যাসিডের ক্ষরণ কমিয়ে দেয় বলে গন্ধভাব, অরুচিভাব, বমিবমিভাব, বুকজ্বালা ইত্যাদি দূর হয়।
পানিশূন্যতার ঔষুধ হিসাবে মধুর ব্যাবহার:
ডায়রিয়া হলেই শরীর প্রচুর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং পানির ঘাটতি দেখা দেয় এমনত অবস্থায় ২ লিটার পানিতে ১০০ মি.লি. মধু মিশিয়ে খেলে দেহের পানিশূন্যতা রোধ হয়।
নিচে পোষ্টটি থেকে মধু খাওয়ারর সঠিক নিয়ম ও খাঁটি মধু চিনার উপায় দেখে নিন
No comments:
Post a Comment